মসজিদ কে বানানো হলো করোনা রোগীদের হাসপাতাল: বিশ্ব জুড়ে প্রশংসার ঢল
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় ভারতে ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণের গ্রাফ। এই পরিস্থিতিতে হাসপাতালগুলিতে বেড ও অক্সিজেন দুই-ই অমিল হওয়ায় প্রবল সঙ্কটের মুখে পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।এমন পরিস্থিতিতে অভিনব পদক্ষেপ নিয়েছে বরোদার এক মসজিদ।রাতারাতি মসজিদটিকে ৩০ শয্যার কভিড হাসপাতালে পরিণত করা হয়েছে। সংবাদ সংস্থা এএনআইকে মসজিদের ট্রাস্টি জানিয়েছেন, ‘হাসপাতালগুলিতে অক্সিজেন ও বেড নেই। পরিস্থিতি দেখে আমরা সিদ্ধান্ত নিই মসজিদটিকেই কভিড হাসপাতাল হিসেবে গড়ে তোলার। রমজানের মাসে এর চেয়ে ভাল উদ্যোগ আর কী হতে পারে?’





গুজরাটের কভিড পরিস্থিতি ক্রমশই খারাপ হচ্ছে। হাসপাতালের বাইরে অ্যাম্বুল্যান্সের লাইন যেন এক চেনা ছবিতে পরিণত হয়েছে। সম্প্রতি এক মামলার রায়দানের সময় গুজরাটের হাই কোর্ট জানায়, একটি হাসপাতালের বাইরে রীতিমতো ৪০টি অ্যাম্বুল্যান্সও দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। যদিও রাজ্যের বিজেপি সরকারের দাবি, একে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে হাসপাতালের ব্যর্থতা হিসেবে চিহ্নিত করা ঠিক নয়।





কেননা বর্তমান পরিস্থিতিতে রোগীদের ভর্তি নেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট প্রোটোকল মানতে হচ্ছে। তাতেই সময় লাগছে। তাছাড়া যেহারে সংক্রমণ বাড়ছে, তাতে এর মোকাবিলা করাও চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই মুহূর্তে দেশের করোনা পরিস্থিতিতে উদ্বেগ ক্রমেই বাড়ছে। নিজেদের মতো করে মারণ ভাইরাসকে রুখতে পদক্ষেপ করেছে অনেকেই।





একদিকে যেমন গুজরাটের মসজিদের এই পদক্ষেপ চোখে পড়ছে, অন্যদিকে ছত্তিশগড়ের এক মহিলা ডেপুটি পুলিশ সুপারিটেন্ডেন্টকে দেখা গিয়েছে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থাতেই ব্যস্ত সড়কে সকলকে কভিড বিধি মেনে চলার অনুরোধ জানাতে। ইন্টারনেটে ভাইরাল হয়ে গিয়েছে সেই ভিডিও। তাতে দেখা গিয়েছে, ডিএসপি শিল্পা সাহু রাস্তায় দাঁড়িয়ে সকলকে আরজি জানাচ্ছেন কভিড বিধি মেনে চলার জন্য। তাঁর হাতে লাঠি।





মুখে ফেস শিল্ড। গ্রীষ্মের গনগনে রোদে দাঁড়িয়ে মানুষকে সচেতন করার তাঁর এই প্রয়াস দেখে মুগ্ধ নেটিজেনরা। অতিমারীর সময়ে করোনা যোদ্ধারা কতটা সংগ্রাম করছেন, তার এক চমৎকার নিদর্শন শিল্পা সাহুর এই ভিডিও। যা দেখে অনেকেই মন্তব্য করেছেন, এই ভাবে দেশের সকলে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করলে করোনাকে হারানো নিশ্চয়ই সম্ভব হবে।সূত্র: সংবাদ প্রতিদিনআরো পড়ুন: খোশ আমদেদ মাহে রমজানুল মোবারক !





খোশ আমদেদ মাহে রমজান রহমত, মাগফিরাত ও নাজাত লাভের বাণী নিয়ে বিশ্বের মুসলমানদের দুয়ারে আবারও উপস্থিত হয়েছে পবিত্র রমজান। মাসব্যাপী সিয়াম সাধনার মধ্য দিয়ে মুসলমানরা এ তিন ধাপে ইবাদত-বন্দেগি করে আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণের প্রশান্তি লাভ করবে।





সারা বছর জ্ঞাত-অজ্ঞাতসারে তারা যে পাপ করেছে, তা থেকে ক্ষমা পাওয়ার মোক্ষম মাস হল এ রমজান। সিয়াম সাধনার দ্বারা আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে তারা নাজাতের পথ খুঁজবে। হাজার রজনীর শ্রেষ্ঠ রজনী লাইলাতুল কদর রমজান মাসকে করেছে বিশেষভাবে মহিমান্বিত। এ রাতেই রাব্বুল আলামিন তার প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদের (সা.) ওপর সর্বশেষ ঐশী গ্রন্থ পবিত্র কুরআন নাজিল করেছেন।কুরআনের শিক্ষা হল বিশ্বাসী মানুষকে ইহলৌকিক ও পারলৌকিক জীবনে অশেষ কল্যাণ দান করা। কৃচ্ছ্রসাধন ও আত্মসংযমের এ মাসে তাই সংসারি মানুষ আল্লাহর প্রদর্শিত পথে চলার ওয়াদা করে, তাদের সবরকম গুনাহ্ মাফ করে দেওয়ার আকুল প্রার্থনা জানায়। এ মাসে আল্লাহ তার বান্দাদের কঠোর ত্যাগ, ধৈর্য, উদারতা ও সততা প্রদর্শনের নির্দেশ দিয়েছেন। এবার করোনা পরিস্থিতে রমজানে তারাবির নামাজে এবং পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের প্রতি ওয়াক্তে খতিব, ইমাম, হাফেজ, মুয়াজ্জিন ও খাদেমসহ সর্বোচ্চ ২০ জন মুসল্লি অংশ নিতে পারবেন বলে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।





এছাড়া জুমার নামাজে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে অংশ নিতে বলা হয়েছে। সবাইকে এ নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব মুসলমানের উচিত করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি লাভের জন্য আল্লাহতায়ালার দরবারে মোনাজাত করা। মহান আল্লাহ আমাদের এই বালা-মুসিবত থেকে রক্ষা করুন। আমরা প্রতি বছরই দেখি, রমজানে একশ্রেণির ব্যবসায়ী সততা আর ন্যায়নীতি ভুলে অতি মুনাফা লাভের প্রতিযোগিতায় নামে। তারা রমজান মাসকে মুনাফা লোটার প্রায় হাতিয়ার করে ফেলে।





জানা গেছে, বাজারে পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকার পরও এবারও রমজান ঘিরে একশ্রেণির ব্যবসায়ী অতি মুনাফার লোভে কারসাজি শুরু করেছে। যথেচ্ছভাবে দ্রব্যমূল্য বাড়ানোর এই প্রবণতা আমাদের ব্যবসায়ীদের কৃচ্ছ্র আর আত্মশুদ্ধির বিপরীতে নিয়ে গেছে যেন। রমজানের সংযমের শিক্ষা অনুসরণের বদলে তারা যেন আরও সুযোগসন্ধানী ও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।এ বাস্তবতায় রমজানে দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখতে বাজার মনিটরিং জোরদার করা প্রয়োজন। বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউনের কারণে সবচেয়ে কষ্টে আছে দরিদ্র মানুষ। গরিব-দুঃখীদের বিপদে সহায়তা করা রমজানের শিক্ষা। সরকারের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানদেরও দায়িত্ব রয়েছে গরিবদের পাশে এসে দাঁড়ানোর। এ পবিত্র মাসে দেশের সব মুসলমান ইসলামের শিক্ষা অনুযায়ী ত্যাগ ও কৃচ্ছ্রসাধনের মাধ্যমে ভ্রাতৃত্ব ও শান্তির আদর্শকে সমুন্নত রাখতে সচেষ্ট হবে-




