সন্তান দুনিয়ার জীবনের সৌন্দর্য। রক্ত ও অস্তিত্বের অংশ নিজ সন্তান। তাই সন্তানের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক সুনিবিড়। এই মায়াজাল প্রাকৃতিক ও জন্মগত। বরং পৃথিবীর সব প্রাণী তার সন্তানকে সর্বোচ্চ ভালোবাসে। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, আল্লাহ
তাঁর রহমতকে ১০০ ভাগে বিভক্ত করেছেন। তার মধ্যে ৯৯ ভাগ তিনি নিজের কাছে সংরক্ষিত রেখেছেন। আর পৃথিবীতে ১ ভাগ পাঠিয়েছেন। ওই ১ ভাগ পেয়ে সৃষ্টজগৎ পরস্পরের প্রতি দয়া করে। এমনকি ঘোড়া তার বাচ্চার ওপর থেকে পা উঠিয়ে নেয় এই আশঙ্কায় যে সে ব্যথা পাবে।’ (বুখারি, হাদিস : ৬০০০)
সন্তানকে ভালোবাসা আল্লাহর ভালোবাসা লাভের উপায়। আর ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে সন্তানকে চুমু খাওয়াও আল্লাহর অনুগ্রহ লাভের উপায়। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) একবার হাসান ইবন আলী (রা.)-কে চুম্বন করেন। সে সময় তাঁর কাছে আকরা ইবন হাবিস তামিমি (রা.) উপবিষ্ট ছিলেন। আকরা ইবন হাবিস (রা.) বলেন, ‘আমার ১০টি পুত্র আছে, আমি তাদের কাউকেই কোনো দিন চুম্বন দিইনি।’ রাসুল (সা.) তার দিকে তাকালেন, অতঃপর বললেন, ‘যে দয়া করে না, সে দয়া পায় না।’ (বুখারি, হাদিস : ৫৯৯৭)
যে মা-বাবার সন্তানের প্রতি মমতাবোধ নেই, তার অন্তর ধীরে ধীরে কঠিন হয়ে যায়। তার অন্তর থেকে দয়ামায়া উঠে যায়। আয়েশা (রা.) বলেন, “এক বেদুঈন নবী (সা.)-এর কাছে এসে বলল, ‘আপনারা শিশুদের চুম্বন করেন, কিন্তু আমরা ওদের চুম্বন করি না।’ নবী (সা.) বললেন, ‘আল্লাহ
যদি তোমার হৃদয় থেকে দয়া উঠিয়ে নেন, তাহলে তোমার ওপর আমার কি কোনো অধিকার আছে?’” (বুখারি, হাদিস : ৫৯৯৮)এ হাদিস থেকে বোঝা যায়, সন্তানকে স্নেহ-মায়া না করলে অন্তর কঠিন হয়ে যায়। মহান আল্লাহ আমাদের সন্তানদের স্বপ্নের মতো বড় হওয়ার তাওফিক দান করুন।
Leave a Reply