1. raihantinv@gmail.com : raihantinv :
March 31, 2023, 2:05 pm
Title :
আমার লাশ যেন কাউকে না দেখানো হয়: মৌসুমী নূরে আলম সিদ্দিকী আর নেই রমজানের প্রথম জুমায় আল আকসা মসজিদে মুসল্লিদের ঢল ৩৫ বছর পর বাবার দেনা শোধ করে ছেলে বললেন ‘পৃথিবীর সেরা কাজটি করলাম’ মসজিদে নামাজ পড়ে এসে দেখেন অটোরিকশা নেই এ বছর সবচেয়ে বেশি সময় রোজা রাখবে যেসব দেশ ব্রয়লার মুরগির নতুন দাম নির্ধারণ, কাল থেকে কার্যকর পবিত্র রমজানে মুসলিমদের শুভেচ্ছা জানালেন বাইডেন শাকিবের দাবি সত্য নয় তখন অনেক কেঁদেছিলাম: বুবলী বোন হাসিনাকে বললে আমাকে মন্ত্রী বানাবেন: কাদের সিদ্দিকী বান্ধবীর ধার করা টাকায় পুলিশে চাকরি পেলেন জামালপুরের রিচি শাকিবকে ধর্ষণ অভিযোগ থেকে বাঁচাতে দুই সাবেক স্ত্রীর চেষ্টা সব মসজিদে একই পদ্ধতিতে তারাবিহ পড়ার আহ্বান বডিগার্ড নিয়ে সাতক্ষীরায় জায়েদ খান

ভিক্ষুকের কোলে রেখে পালানোর পরদিন এসে সন্তানকে নিতে পারেননি মা

  • Update Time : Friday, March 3, 2023
  • 41 Time View

লক্ষ্মীপুরে ভিক্ষুকের কোলে রেখে যাওয়া শিশুটির মায়ের খোঁজ মিলেছে। বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) রাত ৯টার দিকে শিশুটির মা-সহ পরিবারের লোকজন সদর থানায় আসে ভিক্ষুকের কাছে রেখে যাওয়া শিশু ছেলেকে ফিরিয়ে নিতে। তবে থানায় এসেও নিজ সন্তানকে পেলেন না ওই মা।

আদালতের মাধ্যমে ওই শিশুকে ফিরিয়ে নিতে পারবে তার প্রকৃত অভিভাবকরা। শিশুটি এখন বেলাল হোসেন ও নিশি আক্তার নামে এক নিঃসন্তান দম্পতির কাছেই রয়েছে। তারা পৌরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ মজুপুর গ্রামের বাসিন্দা।

শিশুটির মায়ের নাম সুরমা বেগম। তার আরও তিন মেয়ে আছে। ছেলেটির বয়স তিন মাস। নাম রেখেছেন মাহিন। বড় মেয়ের নাম নেহা (৭), মেঝো মেয়ে নুহা (৫) ও ছোট মেয়ে মাহি (৫)। তাদের বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চর বাদাম ইউনিয়নের চরসীতা গ্রামে। তাদের বাবার নাম মিরন, তিনি সৌদি প্রবাসী।

শিশুটির মা জেলা শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের রেহান উদ্দিন ভূঁইয়া সড়কে সন্তানদের নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকেন। তিন মেয়েকে সেখানের একটি মাদ্রাসায় ভর্তি করিয়েছেন। তার বাবার বাড়ি সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের চর উভূতি গ্রামে।কেন তিন মাস বয়সী ফুটফুটে সন্তানকে বৃদ্ধা ভিক্ষুকের কাছে রেখে নিরুদ্দেশ হলেন- জেলা পুলিশ সুপার মাহফুজ্জামান আশরাফ ও সাংবাদিকদের কাছে এর কারণ জানিয়েছেন তিনি।

সুরমা বলেন, আমার স্বামী সৌদিতে থাকেন। চার সন্তান নিয়ে আমি জেলা শহরে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকি। প্রতি মাসে ১১ হাজার টাকা কিস্তি, সন্তান ও সংসারের খরচ লাগে। সবমিলিয়ে আমাকে হিমশিম খেতে হয়। মুদি দোকানে অনেক দেনা হয়ে আছি। তাদের বাবা কোনও খরচ দেয় না। তাই তার ওপর জিদ করে এ কাজটি করেছি। শিশু সন্তানকে ভিক্ষুকের কোলে দিয়ে অন্য সন্তানদেরকে নিয়ে বাপের বাড়ি ভবানীগঞ্জের বাড়িতে চলে যাই। ছেলেকে না নিয়ে যাওয়ায় পরিবারের লোকজন আমাকে বকাঝকা শুরু করে। পরে বুঝতে পেরেছি, কাজটি আমি ঠিক করিনি।তিনি বলেন, বুকের ধনকে রেখে সারারাত ঘুমাতে পারিনি। ঘটনার পরদিন সকাল থেকে তাকে খুঁজতেছি। কোথাও পাইনি। পরে বিকেলের দিকে পরিচিত একজন ফেসবুকের মাধ্যমে শিশুটির বিষয়ে জানতে পারে। তার মাধ্যমে থানায় আসি।

শিশুটির দাদা হাফিজ উল্লা জানান, ১০ থেকে ১২ বছর আগে তার ছেলের সঙ্গে সুরমার বিয়ে হয়। বিয়ের পর ছয় মাস তাদের বাড়িতে ছিল। এরপর থেকে বাপের বাড়িতেই থাকতো। তার ছেলে মিরন (৩৪) প্রায় সাড়ে পাঁচ বছর ধরে সৌদি আরবে থাকে। আর তার পুত্রবধূ নাতি-নাতনিদের নিয়ে জেলা শহরে ভাড়া থাকে। তার ছেলে সংসারের খরচ পাঠায়। তারপরও তার পুত্রবধূ মানসিক সমস্যার কারণে তার নাতিকে ভিক্ষুকের কাছে রেখে চলে যায়। বিষয়টি তারা ঘটনার রাতে সুরমার বাবার কাছ থেকে ফোনে জানতে পারেন। এটা কোনও স্বাভাবিক মানুষের কাজ না। তবে নাতির খোঁজ পেয়ে খুশি তিনি।

এদিকে, বুধবার (১ মার্চ) বিকালে পুলিশ শিশুটিকে ভিক্ষুকের কোল থেকে উদ্ধারের পর স্থানীয় কাউন্সিলর জসিম উদ্দিন মাহমুদের তত্ত্বাবধানে দেওয়া হয়। কাউন্সিলর তার আত্মীয়ের ঘরে লালন-পালনের জন্য রাখেন শিশুটিকে। তারা নিঃসন্তান দম্পতি। বৃহস্পতিবার দুপুরে শিশুটিকে পুলিশ আদালতে সোপর্দ করে। তার দায়দায়িত্ব সমাজসেবা কার্যালয়কে দেওয়ার আবেদন করে পুলিশ। পরে ওই নিঃসন্তান দম্পতি আদালতের কাছে শিশুটিকে লালন-পালনের আবেদন জানালে শর্ত সাপেক্ষে তাদেরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার রাতে শিশুটির মায়ের খোঁজ পাওয়ার পর ওই দম্পতি শিশুটিকে নিয়ে থানায় যান। এ সময় তাদেরকে কান্না করতে দেখা গেছে। একদিনের মধ্যেই শিশুটিকে আপন করে নিয়েছেন তারা। এ সময় শিশুটির প্রকৃত মা বার বার ওই দম্পতির পায়ে ধরে ক্ষমা চাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় তার সন্তানকে ফিরিয়ে নেওয়ার আকুতি জানান।

এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার মো. মাহফুজ্জামান আশরাফ সাংবাদিকদের বলেন, শিশুটিকে পাওয়ার পর আমরা স্থানীয় কাউন্সিলরের তত্ত্বাবধানে দিয়েছি। পরদিন আমরা শিশুটিকে আদালতে সোপর্দ করি। আদালত থেকে ওই দম্পতিকে লালন-পালনের দায়িত্ব দিলেও শর্ত ছিল শিশুটির পরিবারকে পাওয়া গেলে তাদের কাছে হস্তান্তর করতে হবে। এখন তার মা এবং পরিবারের খোঁজ মিলেছে। আমরা আদালতে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দেব। আইনি প্রক্রিয়ার ভিত্তিতে শিশুটিকে আদালতের মাধ্যমে গ্রহণ করতে পারবে তার মা। তবে সে সময় পর্যন্ত শিশুটি ওই নিঃসন্তান দম্পতির কাছে থাকবে।

উল্লেখ্য, বুধবার দুপুর ২টার দিকে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ মজুপুর গ্রামের আধুনিক হাসপাতালের সামনে অজ্ঞাত এক নারী শৌচাগারে যাওয়ার কথা বলে তার কোলের শিশুকে সালমা বেগম (৭০) নামে এক ভিক্ষুকের কোলে রেখে যান। কিন্তু এরপর ওই নারী আর ফিরে আসেননি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 Breaking News
Theme Customized By BreakingNews