ভোলার দৌলতখান উপজেলায় যাত্রীবাহী বাসের চাপায় দুই কলেজছাত্রীসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (১৭ মার্চ) সকাল সোয়া ৯টার দিকে উপজেলার বাংলাবাজার সংলগ্ন ওতোরুদ্দিন এলাকার ভোলা-চরফ্যাশন সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

দুই ছাত্রীর নিহতের খবর শুনেই সেখানে ছুটে যান তার সহপাঠী ও শিক্ষকরা। এসময় দুই ছাত্রীর লাশের পাশে দাঁড়িয়ে বাঁধ ভাঙা কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায় সহপাঠী ও শিক্ষকদের। ঘটনার পর শুক্রবার বিকেল থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দুই ছাত্রীর লাশের পাশে দাঁড়িয়ে শিশু বাচ্চাদের মতো কান্নাকাটি করতে দেখা যায় এক শিক্ষককে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই শিক্ষকের নাম বিপ্লব কুমার পাল। তিনি দৌলতখান উপজেলা হালিমা খাতুন মহিলা মহাবিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক। নিহত দুই শিক্ষার্থী তার ছাত্রী ছিলেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক মিনিট ১০ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে দেখা যায়—শিক্ষক বিপ্লব কুমার পাল নিহত দুই ছাত্রীর লাশের পাশে দাঁড়িয়ে শিশু বাচ্চাদের মতো কান্নাকাটি করছেন। তার মাথায় হেলমেট পড়া। তার চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে। তিনি একবার লাশের দিকে তাকাচ্ছেন আরেকবার নিহত ছাত্রীদের সহপাঠীদের দিকে তাকাচ্ছেন।

শাওন খান নামে এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ছড়িয়ে পড়া ভিডিও তার টাইমলাইনে পোস্ট করে তিনি লিখেছেন, ‘শিশু বাচ্চাদের মতো লাশের পাশে দাঁড়িয়ে কান্নাকাটি করা লোকটি শিখা ও রিমার শিক্ষক। খবর পেয়ে এই স্যার মোটরসাইকেল দিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছে। মাথায় হেলমেট রেখেই শিখা ও রিমার লাশ দেখে কান্না শুরু করেন।’

শিক্ষক বিপ্লব কুমার পাল জানান, বঙ্গবন্ধুর ১০৩তম জন্মদিন উদযাপন উপলক্ষে শুক্রবার সকালে তিনি কলেজে আসেন। এরপর অধ্যক্ষ নুরে আলমের কাছ থেকে দুর্ঘটনার খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে রওনা দেন। শিখা ও রিমার লাশ রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। দুই ছাত্রীর এমন মর্মান্তিক মৃত্যু দেখে তিনি মানসিকভাবে ঠিক থাকতে পারেননি। শিখা ও রিমা তার আদরের ছাত্রী ছিলেন।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার (১৭ মার্চ) সকালে ভোলা-চরফ্যাশন আঞ্চলিক মহাসড়কের মধ্য জয়নগর এলাকায় চট্টগ্রাম থেকে চরফ্যাশের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা শ্যামলী সার্ভিস নামে একটি যাত্রীবাহী বাস নিহত শিখা ও রিমার বহন করা অটোরিকশাটিকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তারা দুজনসহ ৩ জনের মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত অটোরিকশার চালক কাদের বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তবে এখনো তিনি শঙ্কামুক্ত নন। এ ঘটনায় গতকালই সড়ক আইনে মামলা হয়েছে। পুলিশ ঘাতক চালককে গ্রেফতার করেছে।